রাজশাহীর দূর্গাপুরে স্কুলগুলোতে শহীদ মিনার পেয়ে উচ্ছ্বসিত শিশুরা

রাজশাহী ব্যুরো:
রাজশাহীর দুর্গাপুর উপজেলার ৮৩টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নতুন শহীদ মিনার পেয়ে বেশ উচ্ছ্বসিত স্কুলের ক্ষুদে শিক্ষার্থীরা। করোনাকালীন বন্ধ থাকার এই দেড় বছরে প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের উদ্যোগে উপজেলার সকল বিদ্যালয়ে এই শহীদ মিনার নির্মাণ করা হয়েছে। গত রবিবার থেকে স্কুল খুলে দেয়ার পর থেকে স্কুল প্রাঙ্গনে নতুন এসব শহীদ মিনার দেখে আবেগাপ্লুত হন কোমলমতি এসব শিশুরা।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, দুর্গাপুর উপজেলায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে ৮৩টি। এসব বিদ্যালয়ে কোন শহীদ মিনার ছিল না। আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ও জাতীয় শহিদ দিবসসহ বিভিন্ন দিবসে এসব শিশু শিক্ষার্থীদের যেতে হতো অন্য কোনো প্রতিষ্ঠানের শহীদ মিনারে। কোনো কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান অস্থায়ীভাবে শহীদ মিনার বানিয়ে দিবসটি পালন করতো। গত বছরের শেষের দিকে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা হিসেবে যোগদান করেন মোকলেছুর রহমান। তারপর পরিকল্পনা করেন সব স্কুলে শহীদ মিনার তৈরির। সরকারি কোনো বরাদ্দ নয়, স্কুল ফান্ডের নিজস্ব তহবিল থেকে তৈরি হয় ৮৩টি স্কুলে নান্দনিক এসব শহীদ মিনার।
উপজেলার কাশিপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিশু শিক্ষার্থী মায়া, সুমাইয়া, রাফান, তানিয়া জানান- দেড়বছর স্কুল বন্ধ ছিল। এ সময় নির্মাণ করা হয় স্কুলে শহীদ মিনার। তাদের স্কুলে শহীদ মিনার ছিল না। সব শিক্ষার্থীরা স্কুলে শহীদ মিনার পেয়ে উচ্ছ্বসিত। তারা আরও বলেন, বিভিন্ন দিবসে তারা অস্থায়ী শহীদ মিনার তৈরি করে শ্রদ্ধা নিবেদন করতো। এবার স্কুলে নতুন শহীদ মিনার নির্মিত হয়েছে। এতে আনন্দের সহিত বিভিন্ন দিবসে সকল শিক্ষার্থীরা শহিদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন করতে পারবেন। শুধু কাশিপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ই নয়; উপজেলা বাকি ৮২টি বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাই বিদ্যালয় প্রাঙ্গনে এমন শহীদ মিনার দ-ায়মান দেখে বেজায় খুশি।
উপজেলার কাশিপুর সরকারি প্রাথমিক প্রধান শিক্ষক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, স্কুলে স্কুলে শহীদ মিনার নির্মাণ হওয়ায় শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা খুশি। দেড় বছর স্কুল খুলছে। স্কুলে এসেই শিক্ষার্থীরা প্রথমেই তাদের শহিদ মিনার দেখতে ভিড় জমাচ্ছেন। এবার শিক্ষার্থীরা তাদের নিজ স্কুলেই শহীদ মিনারে শহিদদের প্রতি প্রথম শ্রদ্ধা জানাতে পারবে।
উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মোকলেছুর রহমান জানান, তিনি পবা উপজেলায় থাকা অবস্থায় সব বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার স্থাপন করেছেন। গত বছরের শেষের দিকে দুর্গাপুর উপজেলায় যোগদানের পর এ উপজেলায় সব স্কুলে নিজস্ব অর্থায়নে শহীদ মিনারের পরিকল্পনা করা হয়। তিনি আরও বলেন, বিভিন্ন জাতীয় দিবসে বীর শহীদদের প্রতি কোমলমতি শিশুরা যাতে শ্রদ্ধা জানাতে পারে এবং দিবসগুলোর তাৎপর্য উপলব্ধি করতে পারে, সেজন্য শহীদ মিনার নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল, তা বাস্তবায়ন হয়েছে।
দুর্গাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সোহেল রানা বলেন, সব স্কুলে এখন শহীদ মিনার। এটা খুবই ভাল উদ্যোগ। নতুন প্রজন্ম মুক্তিযুদ্ধের চেতনা লালন করতে পারবেন। উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অদিপ্তরের এ সাফল্য শিশু শিক্ষার্থীদের সাথে আমি নিজেও উচ্ছ্বসিত।