ধর্ষণের পর হত্যা মামলা: পাঁচ বছর পর নানা বাড়ি থেকে কিশোরীকে উদ্ধার

মেহের মামুন, (গোপালগঞ্জ) :
পাঁচ বছর আগে ঢাকার ভাটারা এলাকায় এক কিশোরী গৃহকর্মী হিসেবে কাজে গিয়ে ধর্ষণের পর হত্যার শিকার হয় বলে অভিযোগ করেছিলেন তার নির্যাতিতার খালা। মেয়েটিকে তার নানা বাড়ি মাদারীপুর জেলার রাজৈর উপজেলার হোসেনপুর গ্রাম থেকে উদ্ধার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
এ ঘটনায় মেয়েটিকে নির্যাতনে জড়িত অভিযোগে তার গৃহকর্তা, গৃহকর্ত্রীসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে মানব পাচার আইনে মামলা হয়েছে।
ভুক্তভোগী কিশোরীর গ্রামের বাড়ি গোপালগঞ্জের মুকসুদপুরে। দরিদ্র পরিবারে বেড়ে ওঠা কিশোরীকে ২০১৬ সালের ঢাকায় বসবাস করা খালা বাসনা বেগমের কাছে রেখে যায় তার পরিবার। পরে ওই কিশোরী খালার মাধ্যমে ভাটারায় বসবাসকারী রিনা বেগমের বাসায় গৃহকর্মীর কাজ শুরু করে। এরপর ওই বছরের ২৪ এপ্রিল গৃহকর্ত্রী রিনা বেগম ভাটারা থানায় ঐ কিশোরী নিখোজ এ ব্যাপারে একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। সেখানে তিনি উল্লেখ করেন, আগের দিন ওই কিশোরী কাউকে না বলে বাসা থেকে বেরিয়ে গেছে। তাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।
ঐ সময় পূর্ব ভাটারার চিতাখোলা সেতুর কাছে এক কিশোরীর লাশ উদ্ধার হয়। তখন গৃহকত্রী রিনা বেগম এই কিশোরীর খালা বাসনা বেগমসহ তাঁর বাবা-মা বলেন, খুন হওয়া ওই কিশোরীই তাঁদের মেয়ে।
তখন ধর্ষণের পর হত্যার অভিযোগ এনে থানায় মামলা করতে যান কিশোরীর বাবা-মা। তখন থানা থেকে তাঁদের ফিরিয়ে দেওয়া হয়।
পরে বাসনা বেগম ওই কিশোরীকে তাঁর বোনের মেয়ে দাবি করে ২০১৬ সালের ১৪ জুন ঢাকার ৪ নম্বর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে গৃহকর্ত্রী রিনা বেগমসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে ধর্ষণের পর হত্যার অভিযোগ এনে মামলা করেন। আদালত তখন ভাটারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) অভিযোগটি এজাহার হিসেবে নিয়ে তা তদন্ত করে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দেন।
পিবিআই টানা সাত মাস তদন্ত করে ৭ সেপ্টেম্বর মাদারীপুর জেলার রাজৈর উপজেলার হোসেনপুর গ্রামে তার নানা বাড়ি থেকে মেয়েটিকে উদ্ধার করে।
এ ঘটনায় নির্যাতিতা কিশোরীর মা অভিযুক্তদের বিচার দাবী করেন।