South east bank ad

অক্টোবরেই যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত হবে পায়রা সেতু

 প্রকাশ: ২২ সেপ্টেম্বর ২০২১, ০২:৫৯ পূর্বাহ্ন   |   সারাদেশ

অক্টোবরেই যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত হবে পায়রা সেতু
এম.মিরাজ হোসাইন, (বরিশাল) :

অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহে যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হবে দক্ষিনাঞ্চলবাসীর স্বপ্নের পায়রা সেতু। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই সেতুর উদ্বোধন করবেন। উদ্বোধন উপলক্ষে সেতু পরিদর্শন করেছেন বরিশালের বিভাগীয় প্রশাসন। 

দখিনের মানুষের স্বপ্নের এই পায়রা সেতু চালু হলে বরিশাল থেকে কুয়াকাটা যেতে আর ফেরীর দুর্ভোগ পোহাতে হবেনা। আগে যেখানে বরিশাল থেকে কুয়াকাটা যেতে সময় লাগতো ৬ থেকে ৮ ঘন্টা। আর পায়রা সেতু চালু হলে সেখানে সময় লাগবে মাত্র ৩ থেকে ৪ ঘন্টা। এই ফেরীবিহীন সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা চালু হলে কুয়াকাটা সমুদ্র বন্দরে পর্যটন কেন্দ্রের এক বৈপ্লবিক পরিবর্তন ঘটবে। সেই সাথে দক্ষিণাঞ্চলের ব্যবসা-বানিজ্যের দ্বার উম্মোচন হবে। ইতোমধ্যে পায়রা সেতুকে কেন্দ্র করে দক্ষিণাঞ্চলে সরকারের বেশ কিছু মেগা প্রকল্প চলমান রয়েছে।  

১ হাজার ৪৪৭ কোটি ২৪ লাখ টাকায় নির্মিত প্রায় দেড় কিলোমিটার দীর্ঘ এই সেতু অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহেই চালু করতে সকল ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে কর্তৃপক্ষ। মঙ্গলবার বিকেলে ওই সেতুর নির্মাণ কাজের সার্বিক অগ্রগতি পরিদর্শন করেন বরিশালের বিভাগীয় প্রশাসন।  
বরিশালের বিভাগীয় কমিশনার মো. সাইফুল হাসান বাদল, বরিশালের জেলা প্রশাসক জসীম উদ্দীন হায়দার, পটুয়াখালীর জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামাল হোসেন, পায়রা সেতুর প্রকল্প পরিচালক মো. আব্দুল হালিম, বরিশাল পুলিশ সুপার মো. মারুফ হোসেন, পটুয়াখালীর পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শহীদুল্লাহসহ প্রশাসনের বিভিন্ন কর্মকর্তারা পায়রা সেতু পরিদর্শন করেন। 

পায়রা সেতুর প্রকল্প পরিচালক মো. আব্দুল হালিম বলেন, এই সেতু খুলে দেয়ার মধ্য দিয়ে দেশের সর্ব দক্ষিণে কুয়াকাটা পর্যন্ত ফেরিবিহীন সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা চালু হবে। যা বর্তমান সরকারের একটি নতুন মাইলফলক। তিনি বলেন, পায়রা সেতুর দৈর্ঘ্য ১ হাজার ৪শ’ ৭০ মিটার এবং প্রস্থ ১৯.৭৬ মিটার। এটি ফোরলেন বিশিষ্ট সেতু। মূল সেতুসহ নদীর উভয়প্রান্তে মোট ১ হাজার ২শ’ ৬৮ মিটার এ্যাপ্রোচ সড়ক, টোলপ্লাজা, প্রশাসনিক ভবন, ইলেক্ট্রিফিকেশন, সৌন্দর্য বর্ধনসহ অন্যান্য আনুষাঙ্গিক সকল কাজ সম্পন্ন হয়েছে। 

২০০ মিটার করে দেশের দীর্ঘতম দুটি স্প্যান বসানো হয়েছে পায়রা সেতুতে। নদীর তলদেশে বসানো হয়েছে ১৩০ মিটার দীর্ঘ পাইল। যা দেশের সর্ববৃহৎ। বিদ্যুতের আলোয় রাতে নৈসর্গিক দৃশ্যের অবতারনা হয় পায়রা সেতুতে। ২০১৩ সালের ১৯ মার্চ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই পায়রা সেতুর ভিত্তি প্রস্তর উদ্বোধন করেন।

ঢাকা (যাত্রাবাড়ি)-মাওয়া-ভাঙ্গা-বরিশাল-পটুয়াখালী মহাসড়কের (এনএইচ-৮) ১৯২ তম কিলোমিটার এবং বরিশাল-পটুয়াখালী মহসড়কের ২৭ তম কিলোমিটারে লেবুখালীর পায়রা নদীর উপর সব শেষ সেতু নির্মাণের কাজ শুরু হয় ২০১৬ সালের ২৪ জুলাই। কুয়েত ফান্ড ফর আরব ইকোনমিক ডেভলপমেন্ট (কেএফএইডি) এবং ওপেক ফান্ড ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভলপমেন্টের (ওএফআইডি) যৌথ অর্থায়নে ১ হাজার ৪শ’ ৪৭ কোটি টাকা ব্যয়ে সেতু নির্মাণের দায়িত্ব পায় চীনা ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান লংজিয়ান রোড এন্ড ব্রীজ কোম্পানী লিমিটেড। কার্যাদেশে সেতু নির্মাণে ৩৩ মাস সময় বেঁধে দেয়া হলেও দুই দফায় প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে ২০২২ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত। ততাপিও নির্ধারিত সময়ের আগেই যান চলাচলের জন্য সেতুটি উন্মুক্ত করে দেয়া হচ্ছে। 

সেতু এখনও চালু হয়নি, তবে সেতুতে ওঠার থেকে দূর থেকেই ভালো লাগছে। বরিশাল থেকে কুয়াকাটা যেতে শেষ সেতু এটি। তবে সাধারণ মানুষের জন্য এই সেতু আশীর্বাদ। দৃষ্টিনন্দন এই সেতু দেখে সত্যিই মুগ্ধ। উদ্বোধনের অপেক্ষায় থাকা বরিশাল কুয়াকাটা সড়কের পায়রা নদীর উপর নির্মিত দৃষ্টিনন্দন এই সেতুতে আলোকসজ্বা দেখার পর এমন অভিমত ব্যক্ত করেন স্কুল শিক্ষক অনিক মজুমদার।
BBS cable ad