ডিএনসির নিয়োগ পরীক্ষায় জালিয়াতি প্রচেষ্টা ব্যর্থ, ১৮ জনকে সাজা
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের (ডিএনসি) সিপাহী এবং ওয়্যারলেস অপারেটর চাকরির পরীক্ষায় অনিয়মের কারণে ১৮ জন পরীক্ষার্থীকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
শনিবার (১৮ অক্টোবর) বিভিন্ন পরীক্ষাকেন্দ্রে অভিযান চালিয়ে ৫ জনকে প্রযুক্তিনির্ভর প্রতারণার সরঞ্জামসহ এবং ১৩ জন প্রক্সি পরীক্ষার্থীকে হাতেনাতে আটক করা হয়।
ঘটনাস্থলেই ডিএনসি’র নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে দোষীদের বিভিন্ন মেয়াদে দণ্ড দেওয়া হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেন ডিএনসির সহকারী পরিচালক (জনসংযোগ কর্মকর্তা) মোস্তাক আহমেদ।
তিনি বলেন, অনুষ্ঠিত লিখিত পরীক্ষায় সিপাহী পদে ১ হাজার ৮২ জন এবং ওয়্যারলেস অপারেটর পদে ১২৪ জন পরীক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেন। এসব পরীক্ষায় অনিয়মের কারণে ১৮ জন পরীক্ষার্থীকে বহিষ্কার করা হয়। এ সময় উদ্ধার করা হয় অত্যাধুনিক স্পাই কমিউনিকেশন যন্ত্র, যার মাধ্যমে পরীক্ষার্থী বাইরে থাকা সহযোগীদের সঙ্গে গোপন কথোপকথন চালাতে পারত।
ডিএনসি জানায়, চলতি বছরের ৬ আগস্ট ডিএনসি সিপাহী (১৭তম গ্রেড) পদে ১০৫টি এবং ওয়্যারলেস অপারেটর (১৮তম গ্রেড) পদে ১২টি শূন্যপদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে।
বিপুল সাড়া পেয়ে সিপাহী পদে প্রায় ২৬ হাজার ও ওয়্যারলেস অপারেটর পদে ১১ হাজার প্রার্থী আবেদন করেন। বিভিন্ন ধাপে বাছাই শেষে লিখিত পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ পান যথাক্রমে ১ হাজার ১৫৪ জন ও ১২৬ জন প্রার্থী।
গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ডিএনসি একটি সংঘবদ্ধ প্রতারণা চক্রকে শনাক্ত করে পর্যবেক্ষণে রাখে।
উদ্ধারকৃত ডিভাইসগুলো হলো-
ইয়ারপিস মাইক্রোফোন: কানের ভেতরে স্থাপিত ক্ষুদ্র ডিভাইস, যার ওজন মাত্র ১৮ গ্রাম এবং এক চার্জে ৩-৪ ঘণ্টা সক্রিয় থাকে।
জিএসএম কার্ড ডিভাইস: ক্রেডিট কার্ড আকারের ব্লুটুথ সংযুক্ত ডিভাইস, যা ৮-১০ ফুট দূরত্বে ইয়ারপিসের সঙ্গে সংযুক্ত থেকে দুই-দিকের যোগাযোগ সম্ভব করে।
ডিএনসি জানায়, এই অভিযান প্রমাণ করে যে প্রতিষ্ঠানটি নিয়োগ পরীক্ষায় দুর্নীতি, অনিয়ম ও প্রতারণার বিরুদ্ধে শূন্য সহনশীলতা নীতি অনুসরণ করছে। গোয়েন্দা নজরদারি ও প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে নিয়োগ প্রক্রিয়াকে সম্পূর্ণ স্বচ্ছ ও ন্যায়নিষ্ঠ করা সম্ভব হয়েছে।
ডিএনসি জানায়, নিয়োগ প্রক্রিয়ায় সর্বোচ্চ স্বচ্ছতা, জবাবদিহি ও প্রার্থীদের আস্থা নিশ্চিত করতে প্রতিটি পরীক্ষার ফলাফল একই দিনে প্রকাশ করা হয়েছে। পাশাপাশি যেকোনো ধরনের প্রতারণা বা অনৈতিক কর্মকাণ্ড রোধে উন্নত প্রযুক্তি ও গোয়েন্দা নজরদারি কার্যক্রম চালানো হয়।


