নির্যাতিত শিশুর চিকিৎসার দায়িত্ব নিলেন নওগাঁ জেলা পুলিশ সুপার

নওগাঁর মহাদেবপুরে মোবাইল চুরির অপবাদ দিয়ে হাত-পা বেঁধে শিহাব হোসেন নামের এক শিশুকে নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে। শুক্রবার দুপুরে নওগাঁ-রাজশাহী মহাসড়ক সংলগ্ন বাগাচারা এলাকায় নির্মাণাধীন একটি অটো গ্যাস ফিলিং স্টেশনের সাইট অফিসে এ ঘটনা ঘটে।
নির্যতিত শিহাব হোসেন (১১) একই উপজেলার বাগাচারা গ্রামের খোরশেদ আলমের ছেলে। সে নওগাঁ সদর হাপানিয়া হাই স্কুলের ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী।
মারধরের ঘটনার পর চিকিৎসার জন্য শিশুটিকে মহাদেবপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করানো হয়। দ্রুত তার চিকিৎসা করাতে না পারলে তার শরীরের বড় ক্ষতি হয়ে যেতে পারে বলে জানান চিকিৎসক।
চিকিৎসকের কথা শুনে দিশেহারা হয়ে পড়েন শিহাবের বাবা অটোরিকশা চালক খোরশেদ আলম।
বিষয়টি জানতে পেরে শুক্রবার রাতে নওগাঁর পুলিশ সুপার মো. আবদুল মান্নান মিয়া নির্যাতিত শিশুর বাবার সঙ্গে কথা বলেন এবং ছেলের চিকিৎসার দায়িত্ব নেন। শিশুটির চিকিৎসা ও ওষুধের সব খরচ বহন করবেন পুলিশ সুপার।
শিহাবের বাবা খোরশেদ আলম বলেন, ‘শিহাবের চিকিৎসার জন্য অনেক টাকার প্রয়োজন। অটোরিকশা চালিয়ে সংসার চালাতেই হিমশিম খাচ্ছি। এরইমধ্যে অনেক ঋণ করে ফেলেছি। সন্তানের চিকিৎসার টাকা জোগাড় করতে না পেরে চিন্তিত ছিলাম। পুলিশ সুপার চিকিৎসার সব খরচ বহনের আশ্বাস দিয়েছেন। তিনি পাশে না দাঁড়ালে ছেলেটার অনেক বড় ক্ষতি হতো।’
পুলিশ সুপার আবদুল মান্নান মিয়া বলেন, ‘খোরশেদ আলম অর্থের অভাবে সন্তানের চিকিৎসা করাতে পারছিলেন না। শিশু শিহাবকে সুস্থ করে তার বাবার মুখে হাসি ফোটাতে পারলেই আমি সার্থক হব।’
মহাদেবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আজম উদ্দিম মাহমুদ জানান, মারধরের ঘটনায় গতকাল সন্ধ্যায় মূল অভিযুক্ত বকুল হোসেন (৫৫) নামের এক ব্যক্তিকে আটক করেছে পুলিশ। তিনি ওই অটো গ্যাস ফিলিং স্টেশনের নৈশপ্রহরী। তার বাড়ি উপজেলার চৌমাশিয়া গ্রামে।
ওসি আরও জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে অভিযুক্ত ব্যক্তি নির্যাতনের কথা স্বীকার করেছেন। তাকে হাজতে রাখা হয়েছে। আজ শনিবার সকালে অভিযুক্ত বকুল হোসেনকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।’