রংপুরে জীবনের জীবন বাঁচাতে এগিয়ে এলেন এসপি বিপ্লব কুমার সরকার

মাহমুদুল হাসান জীবন। বয়স ১০ বছর। জীবনের আলো প্রস্ফুটিত হওয়ার আগেই এক দুর্ঘটনায় পতিত হয় জীবন। সাইকেল থেকে পড়ে ভেঙ্গে যায় তার একটি হাত। জীবনের দরিদ্র বাবা স্থানীয় লোকজনের পরামর্শে হাতুড়ে ডাক্তার আর কবিরাজের চিকিৎসা করতে থাকেন। কিন্তু ছোট্ট ফুলের মতো শিশু জীবন সুস্থ হচ্ছে না। যে জীবন সবসময় হেসেখেলে বেড়াতো, সেই জীবন এখন শুধু ব্যথায় কাতরাতে থাকে।
জীবনের বাবা পেশায় রাজমিস্ত্রী। দিন আনে, দিন খায়। এ অবস্থায় জীবনের চিকিৎসা করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে তার বাবাকে। তাদের এ দুঃসময়ে এগিয়ে আসেন জীবনের দাদু। স্থানীয় এক স্কুলের নৈশপ্রহরী তিনি। তিনি সমাজের বিভিন্ন লোকের কাছে হাত পেতে কোন রকমে রংপুর মেডিকেলে ভর্তি করান জীবনকে। কিন্তু ততদিনে অনেক দেরি হয়ে গেছে। জীবনের হাতে এখন পচন ধরে গেছে। এখন এ পচন সারা শরীরে ধীরে ধীরে ছড়িয়ে যাচ্ছে। রংপুর মেডিকেলে কিছুদিন চিকিৎসা করানোর পর একটি প্রাইভেট ক্লিনিকে ভর্তি করানো হয় জীবনকে। কিন্তু ক্লিনিকের এতো খরচ জোগাতে না পেরে এক পর্যায়ে চিকিৎসা অসমাপ্ত রেখেই রিলিজ করে বাড়িতে নিয়ে আসে জীবনকে। জীবনের জীবন হয়ে যায় অনিশ্চিত, ধীরে ধীরে পঙ্গুত্বের দিকে এগোতে থাকে জীবন।
জীবনের এ করুন কাহিনী শুনে তাকে ডেকে আনেন রংপুর জেলা পুলিশের পুলিশ সুপার বিপ্লব কুমার সরকার বিপিএম (বার), পিপিএম। জীবন ও তার দাদুর কাছে বিস্তারিত শুনে পুলিশ সুপার দ্রুত জীবনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানোর ব্যবস্থা করার নির্দেশ দেন।
তিনি এসময় জীবনের চিকিৎসার সব দায়িত্বভার নেন। এসপি বিপ্লব কুমার সরকার ছোট্ট জীবনের মাথায় হাত বুলিয়ে তাকে সাহস দেন। আপ্যায়ন করান। যে জীবন হাত ভাঙ্গার ব্যথায় হাসতে ভুলে গিয়েছিলো, এসপির স্নেহ ও ভালোবাসায় সে আবারও উচ্ছ্বসিত হয়ে উঠে, নতুন করে বাঁচার স্বপ্ন দেখে। পুলিশ সুপারের এ আন্তরিকতা দেখে জীবনের দাদু আনন্দে কেঁদে ফেলেন। এসময় জীবন ও তার দাদুর আনন্দ দেখে পুলিশ সুপার কার্যালয়ের সবাই আবেগতাড়িত হয়ে পড়েন।