ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ট্রলারডুবির ঘটনায় মাঝিসহ আটক ৩, নিখোঁজ বহু

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগরে বালুবাহী ট্রলারের ধাক্কায় যাত্রীবোঝাই নৌকাডুবির ঘটনায় মাঝিসহ তিনজনকে আটক করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ২১ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত অনেকেই নিখোঁজ রয়েছেন। এ ঘটনার তদন্তে তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আনিসুর রহমান জানিয়েছেন, এখনো অনেকেই নিখোঁজ রয়েছে। তবে এ সংখ্যাটি কত হতে পারে তা সঠিক বলা যাচ্ছে না।
এ উপজেলার লইস্কা বিলে গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যা পৌনে ৬টার দিকে এ নৌকাডুবির ঘটনা ঘটে। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ফায়ার সার্ভিস ২১ জনের মরদেহ উদ্ধার করেছে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রশাসক হায়াত উদ্দৌলা খান বলেন, ঘটনার তদন্তে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। জেলা প্রসাশনের পক্ষ থেকে নিহতদের পরিবারকে ২০ হাজার টাকা করে সহায়তা দেওয়া হবে। ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে দায়ীদের দ্রুত আইনের আওতায় আনা হবে বলেও জানান ডিসি।
নিহতদের মধ্যে ১৬ জনের পরিচয় জানা গেছে। তারা হলেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর শহরের পৈরতলা এলাকার মোমেনা বেগম ও কাজল বেগম, দাতিয়ারা এলাকার ১২ বছরের তাসফিয়া মিম, সদর উপজেলার সাদেকপুর ইউনিয়নের ৮ বছরের তানভীর, চিলোকুট গ্রামের আট বছরের তাকুয়া, নরসিংসার গ্রামের ৭ বছরের সাজিম ও ভাটপাড়া গ্রামের শারমিন।
বিজয়নগর উপজেলার ফতেহপুর গ্রামের আরিফ বিল্লাহ, বেড়াগাঁও গ্রামের মঞ্জু বেগম, ফরিদা বেগম ও তার ১০ বছরের মেয়ে মুন্নি ও কমলা বেগম, নূরপুর গ্রামের মিনারা বেগম, আদমপুর গ্রামের অঞ্জনী বিশ্বাস ও পরিমল বিশ্বাসের দুই বছরের মেয়ে তিথিবা বিশ্বাস এবং ময়মনসিংহের ঝর্ণা বেগম।
এ ঘটনায় পালিয়ে যাওয়ার সময় উপজেলার চরইসলামপুর গ্রাম থেকে মাঝিসহ তিনজনকে আটক করে পুলিশে দিয়েছে জনগণ। আটকদের মধ্যে হলেন- ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সরাইল উপজেলার পানিশ্বর ইউনিয়নের ষোলাবাড়ি এলাকার আবজল মিয়ার ছেলে ও ট্রলারের মাঝি জামির মিয়া (৩৫), মাঝির সহযোগী কাশেম মিয়ার ছেলে মো. খোকন (২২) ও মৃত আব্দুল করিমের ছেলে মো. রাসেল (১৮)।
বিষয়টি নিশ্চিত করে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মোজাম্মেল হোসেন রেজা জানান, ঘটনার পর ট্রলারটি ঘটনাস্থলে ফেলে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে মাঝি ও তার দুই সহযোগী। এ সময় চরইসলামপুরে তাদেরকে আটক করে পুলিশে দেয়া হয়।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, নৌকাটি যাত্রী নিয়ে জেলার বিজয়নগর উপজেলার চম্পকনগর থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার শহরের আনন্দ বাজার ঘাটে আসছিল। বিকেল সোয়া ৫টার দিকে বিপরীত দিক থেকে আসা বালুবোঝাই ট্রলারের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ হলে যাত্রীবাহী নৌকাটি উল্টে সব যাত্রী নদীতে পড়ে যায়। ট্রলারে প্রায় ৫০ জন যাত্রী ছিল বলে ধারণা করা হচ্ছে।