আ.লীগ আমলের তিন নির্বাচন কমিশনের সিইসিসহ সবার পাসপোর্ট বাতিল

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে পতিত শেখ হাসিনা সরকারের আমলের তিন নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সদস্যদের পাসপোর্ট বাতিল করা হয়েছে। সম্প্রতি তাদের পাসপোর্ট বাতিল করা হয় বলে দেশের একটি জাতীয় দৈনিকে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে।
এরপর আজ পাসপোর্ট অধিদপ্তরের নিজস্ব সূত্রে এসব তথ্য নিশ্চিত হয়েছে।
ওই তিন কমিশনের প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী রকিবউদ্দীন আহমেদ, কে এম নূরুল হুদা ও কাজী হাবিবুল আউয়াল সহ অন্য ১২ জন নির্বাচন কমিশনের পাসপোর্ট বাতিল করা হয়।
তাদের মধ্যে সাবেক সিইসি কে এম নুরুল হুদাকে গত রোববার উত্তরা থেকে আটক করে পুলিশ। তার আগে তাকে মব সৃষ্টি করে জনতা হেনস্তা করে পুলিশের হাতে তুলে দেয়।
সোমবার কে এম নুরুল হুদাকে আদালতে তুলে পুলিশ ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করলে চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।
ই-পাসপোর্ট প্রকল্পের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মুহম্মদ নুরস ছালাম তিন নির্বাচন কমিশনের সিইসিসহ সব সদেস্যের পাসপোর্ট বাতিলের সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, অন্তর্বর্তী সরকারের নির্দেশনা মোতাবেক এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হয়।
প্রাধিকার অনুযায়ী সিইসিসহ সাবেক কমিশনাররা কূটনৈতিক মর্যাদার লাল পাসপোর্ট পান, যা ‘ডিসি’ আদ্যক্ষর দিয়ে শুরু হয়। তবে অবসর গ্রহণের পর বিশেষ সুবিধার লাল পাসপোর্ট সমর্পণ করে তাদের সাধারণ পাসপোর্ট নিতে হয়। নিয়মানুযায়ী বিগত তিনটি কমিশনের প্রত্যেকে পরবর্তী সময়ে সাধারণ (ই-পাসপোর্ট) গ্রহণ করেন।
তিন তিন কমিশনের সর্বশেষটি ছিল কাজী হাবিবুল আওয়ালের নেতৃত্বাধীন। এই কমিশনের অধীনে ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে অনুষ্ঠিত নির্বাচনটি দেশে ‘ডামি ভোটের নির্বাচন’ বলে পরিচিত। ওই বছরের ৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত দায়িত্ব পালনকারী কমিশনের অন্য সদস্যরা ছিলেন মোহাম্মদ আলমগীর, আনিসুর রহমান, আহসান হাবিব খান ও রাশিদা সুলাতানা।
এর আগে ২০১৭ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত সিইসি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন কে এম নুরুল হুদা। তার নেতৃত্বাধীন কমিশনের আয়োজনে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন দেশে ‘রাতের ভোট’ হিসেবে পরিচিত।
হুদার ভাগ্নে এস এম শাহজাদা ২০১৮ সালের সাধারণ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে পটুয়াখালী-৩ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।
নির্বাচনের সময় সহিংসতা নিয়ে সমালোচনা করায় ২০২২ সালের জানুয়ারিতে হুদা তার সহকর্মী নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদারকে ‘মিথ্যাবাদী’ বলে অভিহিত করেন।
এই কমিশনের অন্য সদস্যরা হলেন কবিতা খানম, রফিকুল ইসলাম ও শাহদাত হোসেন।
২০১২ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করে কাজী রকিব উদ্দিনের নেতৃত্বাধীন কমিশন। তাদের সময়ে ২০১৪ সালে অনুষ্ঠিত ১০ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনটি ‘বিনা ভোটের নির্বাচন’ বলে পরিচিত। ওই নির্বাচনে আওয়ামী লীগের ১৫২ জনকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত ঘোষণা করে কমিশন।
এই কমিশনের অন্য সদস্যরা হলেন মো. শাহ নেওয়াজ, মোহাম্মদ আবু হাফিজ, মোহাম্মদ আব্দুল মোবারক ও ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) জাবেদ আলী।