South east bank ad

২০ কোটি টাকার জাল রেভিনিউ স্ট্যাম্প, কোর্ট ফি ও তৈরীর সরঞ্জামসহ গ্রেফতার ৪

 প্রকাশ: ২৬ জুন ২০২১, ০৩:১২ পূর্বাহ্ন   |   পুলিশ

২০ কোটি টাকার জাল রেভিনিউ স্ট্যাম্প, কোর্ট ফি ও তৈরীর সরঞ্জামসহ  গ্রেফতার ৪
জাল রেভিনিউ স্ট্যাম্প তৈরীর সাথে জড়িত ও তা দেশের বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে দেয়ার অভিযোগে জাল রেভিনিউ স্ট্যাম্প ও কোর্ট ফি প্রস্তুতকারী সিন্ডিকেটের মূল হোতাসহ ৪ জনকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা সাইবার এন্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগ। গ্রেফতারকৃতরা হলো- মোঃ আবু ইউসুফ  ওরফে পারভেজ ওরফে রানা,  মোঃ আতিয়ার রহমান সবুজ,  মোঃ নাসির উদ্দিন ও  মোঃ নুরুল ইসলাম ওরফে সোহেল।
২৪ জুন,২০২১ থেকে ২৫ জুন,২০২১ পর্যন্ত ধারাবাহিক অভিযানে ঢাকা মহানগর এবং নারায়ণগঞ্জ জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে তাদেরকে গ্রেফতার করেছে গোয়েন্দা সাইবার এন্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগের ওয়েব বেইজড ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন টিম।
গ্রেফতারের সময়ে তাদের হেফাজত হতে বিভিন্ন মূল্যমানের ২০ কোটি ২ লক্ষ ২৪ হাজার টাকা সমপরিমানের ১৩ লক্ষ ৪০ হাজারটি জাল রেভিনিউ স্ট্যাম্প,  ১লক্ষ ৯৪ হাজার ৮ শত টাকা মূল্যের ১৯ হাজার ৪ শত ৮০টি জাল কোর্ট ফি, জাল রেভিনিউ স্ট্যাম্প বিক্রির নগদ ৩ কোটি ৬০ লক্ষ টাকা,   ১১৪ গ্রাম স্বর্ণালঙ্কার, ০৮ টি মোবাইল ফোন, একটি পেনড্রাইভ,  ডাক বিভাগ ও বাংলাদেশ ব্যাংকসহ বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ১১ টি সিল, ০২ টি স্ট্যাম্প পরীক্ষার ইলেকট্রিক মেশিন, বাংলাদেশ ডাক বিভাগের রশিদের কপি ৩০০ পাতা, একটি বড় প্রেস মেশিন, দুইটি কাটিং মেশিন,  একটি ডাই কাটিং মেশিন,   একটি  পোলাররপেপার কাটিং মেশিন, তিনটি মাল্টি ফাংশন ম্যাগনিফাইং মানি ডিটেক্টর,   শতাধিক কোটি টাকা জাল স্ট্যাম্প তৈরীর কাগজ,   বিভিন্ন ব্যাংকের সর্বমোট ১ কোটি ৫ লক্ষ ৪০ হাজার টাকার ১৮ টি চেকের পাতা, ধৃত আসামী মোঃ আবু ইউসুফ (রানা) এর নিজ নামীয় যমুনা ব্যাংক, ডাচ বাংলা ব্যাংক, ব্রাক ব্যাংক এর মোট ৩টি চেক বহি উদ্ধার করা হয়। আজ শুক্রবার ( ২৫ জুন) ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ডিবি) এ কে এম হাফিজ আক্তার বিপিএম (বার)।
ডিবির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার  বলেন, ঢাকা শহরে বিভিন্ন জায়গায় ধারাবাহিক অভিযানে গোয়েন্দা ওয়েব বেইজড ইনভেস্টিগেশন টিম একটি বড় জাল রেভিনিউ ষ্ট্যাম্প এবং কোর্ট ফি প্রস্তুতকারী চক্রের ৪ জনকে গ্রেফতার করে। এ চক্রের মূলহোতা আবু ইউসুফ  ও আতিয়ার,  নাসির এবং  সোহেলদের বিরুদ্ধে মতিঝিল থানায় মামলা রুজু হয়েছে। উল্লেখ্য এদের বিরুদ্ধে পূর্বেও একাধিক মামলা রুজু হয়েছিল।
তিনি বলেন, জালিয়াতি এ চক্রটি ২০১৭ সাল থেকে ২০১৯ পর্যন্ত কস্পিউটার এবং কালার প্রিন্টার ব্যবহার করে সীমিত পরিসরে উক্ত ব্যবসা চালিয়ে আসছিল। গ্রেফতারকৃতরা ২০১৯ সালে মাতুয়াইলের একটি গোপন ছাপাখানা বাসিয়ে বড় পরিসরে উক্ত জালিয়াতি ব্যবসাটি শুরু করে।
জালিয়াতি এ চক্রের  সদস্যদের ব্যবসা পরিচালনা সংক্রান্তে গোয়েন্দা এ কর্মকর্তা বলেন, এরা প্রথম পর্যায়ে সুদক্ষ অপারেটর দ্বারা গোপন কোন ছাপাখানায় বিভিন্ন মূল্য মানের জাল রেভিনিউ ষ্ট্যাম্প ছাপায়। দ্বিতীয় পর্যায়ে ছাপানো রেভিনিউ ষ্ট্যাম্প গুলো ছাপাখানা থেকে জালিয়াতি চক্রের সদস্যদের মাধ্যমে হোলসেলার ভেন্ডারদের কাছে পৌঁছে যায়। তৃতীয় পর্যায়ে হোলসেলারদের মাধ্যমে রিটেইলারদের দ্বারা ব্যবহারকারীর নিকট পৌঁছায়।
এ চক্রটি বিভিন্ন গার্মেন্টস, ফ্যাক্টরি,সরকারি-বেসরকারি দপ্তর,বীমা ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান,বিভিন্ন পোষ্ট অফিস, আদালত, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ হাসপাতালে এ জাল রেভিনিউ ষ্ট্যাম্প ও কোর্ট  ফি বিক্রি করে। এ ধরনের জল স্ট্যাম্পের কারণে সরকার কোটি কোটি টাকা রাজস্ব হারাচ্ছে মর্মে পুলিশের এ গোয়েন্দা এ কর্মকর্তা জানান।
প্রাথমিকভাবে জাল স্ট্যাম্প শনাক্তের বিষয়ে তিনি বলেন, গ্রেফতারকৃতদের জাল স্ট্যাম্প তৈরীর স্টেপ গুলো এতটাই নিখুঁত ছিল যে খালি চোখে এগুলো ধরার কোন সুযোগ ছিল না। কাগজগুলো হুবহু একই  রকম।  আসল স্ট্যাম্প ইউভি রে  মেশিনের নীচে ধরলে কালো  কালো রেখা দৃশ্যমান হয় কিন্তু জাল স্ট্যাম্পের ক্ষেত্রে দেখা যায় না। এছাড়াও আসল স্ট্যাম্পের গভ. লেখাটি চকচক করে কিন্তু জাল স্ট্যাম্পের ক্ষেত্রে চকচক করে না। রেভিনিউ স্ট্যাম্প কোর্ট ফি সমূহ ডাকঘর ও ব্যাংক থেকে কেনার পরামর্শ দেন পুলিশের এ কর্মকর্তা। 
উল্লেখ্য, উক্ত অভিযানে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থানাধীন ওয়ার্ড নং-৬৫, ব্লক-সি, কলেজ রোড মাতুয়াইল দক্ষিণপাড়া ৬৮/৩ জননী হাউজ জনৈক শাহ আলমের বাসার নিচতলায় জাল রেভিনিউ স্ট্যাম্প ও কোর্ট ফি প্রস্তুতকারী গোপন ছাপাখানা সিলগালা করা হয়েছে।


BBS cable ad