জঙ্গিদের প্রধান লক্ষ্য ছিল পুলিশ: সিটিটিসি প্রধান

সোমবার বিকালে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান সিটিটিসি প্রধান ও ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মো. আসাদুজ্জামান বলেন, ‘আপনারা জানেন, ঈদের পরপর গত ১৭ মে তারা পুলিশ বক্সে বোমা রেখে এসেছিল। এ ধরনের বিস্ফোরকের মাধ্যমে তাদের টার্গেট ছিল সেখানে হামলা করা। তবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ছিল তাদের অন্যতম টার্গেট।’
গত ১৭ মে নারায়ণগঞ্জের সাইনবোর্ড সংলগ্ন পুলিশ বক্সে বোমা ফেলে যায় সন্ত্রাসীরা। পরবর্তী সময়ে বোমাটি নিস্ক্রিয় করা হয়। এই বোমার তদন্ত করতে গিয়ে রবিবার বিকালে ও রাতে দুজনকে গ্রেপ্তার করে সিটিটিসির স্পেশাল অ্যাকশন গ্রুপ। তাদের দেয়া তথ্যে রবিবার রাতে নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার ও বন্দর থানায় অভিযান চালিয়ে আইইডি ও বোমা তৈরির সরঞ্জাম উদ্ধার ও তিনটি আইইডি নিস্ক্রিয় করে সিটিটিসি বোম ডিস্পোজাল ইউনিট। সিটিটিসির হাতে গ্রেপ্তার দুজনই নব্য জেএমবির সক্রিয় সদস্য। একজন বোমা তৈরির কারিগর ও অপরজন জঙ্গি প্রশিক্ষক। তারা নব্য জেএমবির গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে থাকলেও স্লিপার সেল হিসেবে আমিরের অধীনে কাজ করছিলেন। ওই দুই বাড়িতে বানানো আইইডি দিয়ে পুলিশের ওপর হামলার পরিকল্পনা ছিল।
গ্রেপ্তার দুজন হলেন আব্দুল্লাহ আল মামুন ওরফে ডেভিড কিলার ও মো. কাউসার হোসেন ওরফে মেজর ওসামা।
ডেভিড কিলারকে জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে সিটিটিসি প্রধান আসাদুজ্জামান বলেন, ‘নারায়ণগঞ্জের সাইনবোর্ড এলাকায় ট্রাফিক পুলিশ বক্সে যে বোমাটি রাখা হয়েছিল সেটি তার আস্তানায় তৈরি করে তার এক সহযোগীর মাধ্যমে নারায়ণগঞ্জে নিয়ে এসেছিল।’
পুলিশ কর্মকর্তা জানান, মো. কাউসার হোসেন ওরফে মেজর ওসামা জানান, তিনি দীর্ঘদিন থেকে নব্য জেএমবির সামরিক শাখার প্রশিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। এরই ধারাবাহিকতায় তিনি ওই সংগঠনের সামরিক শাখার অন্যান্য সদস্যদের সঙ্গে অনলাইনে ও অফলাইনে যোগাযোগ রক্ষা করে বোমা তৈরির প্রশিক্ষণ দিতেন। বাংলাদেশের নব্য জেএমবির আমির মাহাদী হাসান ওরফে আবু আব্বাস আল বাঙালির সঙ্গে তিনি নিয়মিত যোগাযোগ রাখতেন বলে জানিয়েছেন।
গ্রেপ্তার দুই জঙ্গি একই সংগঠনের হলেও ভিন্ন গ্রুপের হয়ে কাজ করছিলেন। তাদের মধ্যে কোনো যোগসাজশ ছিল কি না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘গ্রেপ্তার জঙ্গিরা স্লিপার সেল হিসেবে কাজ করে আসছেন। তাদের আমিরের নির্দেশে আলাদা আলাদাভাবে কাজ করতেন। তাদের মধ্যে আপাতত কোনো যোগসাজশ আমরা লক্ষ্য করিনি। তবে আমাদের জিজ্ঞাসাবাদ চলমান রয়েছে।’
গ্রেপ্তার একজন ‘মেজর’ ও অন্যজন ‘ক্যাপ্টেন’, তারা সামরিক বাহিনীতে ছিল কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘এটা তাদের সাংগঠনিক নাম। তাদের সংগঠনের সামরিক শাখা রয়েছে, সেটির সদস্য তারা।’
তারা কত দিন ধরে এ কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘তারা গত ১৫ মে একটি হামলার চেষ্টা করেছেন। গতকাল তাদের আমরা গ্রেপ্তার করি। গ্রেপ্তারের পরে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ করেছি। আজকের রিমান্ড আবেদন করে আদালতে পাঠিয়েছি। আবেদন মঞ্জুর হলে এ বিষয়ে তাদের বিস্তারিত জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। তাদের ১০ দিন করে রিমান্ড আবেদন করা হয়েছে।’