খিলক্ষেতে ক্লুলেস হত্যাকান্ডের রহস্য উদঘাটন

গত ৫/০৫/২০২৩ তারিখ বিকেল ৩ টায় খিলক্ষেত থানায় একটি হারানো জিডি হয়। খিলক্ষেতের ডুমনী এলাকা নিবাসী মো: ইকরাম হোসেন মোল্যা নামে এক যুবকের নিখোঁজ সংক্রান্তে হারানো জিডিটি করা হয়। নিখোঁজ ব্যক্তিকে গত বৃহস্পতিবার রাত ১১ টা থেকে পাওয়া যাচ্ছে না মর্মে ভিকটিমের পরিবার জানালে খিলক্ষেত থানা পুলিশ তৎপর হয় ভিকটিমকে উদ্ধারের জন্য।
পরদিন সকালেই ডুমনী এলাকার কাউন্সিলর গলি ছাড়িয়ে বালুচর এলাকায় একটি মৃতদেহ পাওয়া গেলে ভিকটিমের পরিবার তা সনাক্ত করে। ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে উপ পুলিশ কমিশনার গুলশান নির্দেশনায় এডিসি ক্যান্টনমেন্টের নেতৃত্বে দুইটি টিম একসাথে কাজ করতে থাকে এই রহস্য উদঘাটনের জন্য।
তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় ভিকটিমের ০৪ তারিখ বৃহস্পতিবার রাতের অবস্থান সনাক্ত করা হয় এবং কাদের সাথে ভিকটিম যোগাযোগ করে তার সবকিছু নিশ্চিত হওয়ার চেষ্টা করা হয়। তার প্রেক্ষিতে দুজন সন্দেহভাজন ব্যক্তিকে আটক করা হয়। ইতোমধ্যে ঘটনাস্থল থেকে খাতা সেলাইয়ের ভ্রমর, ভিকটিমকে হত্যা করার জন্য ব্যবহৃত কাটার ও ১ টি হাতুড়ি উদ্ধার করা হয়। সন্দেহভাজনদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় ভিকটিমের সাথে একই এলাকায় বসবাসরত শান্তের ০২ লক্ষ টাকা লেনদেন সংক্রান্তে ঝামেলা চলছিল। ভিকটিম ইকরাম আসামী শান্তকে বালুর ব্যবসার জন্য ২ লক্ষ টাকা প্রদান করে। সঠিকভাবে লাভ না দেয়ায় ভিকটিম ইকরাম তার অর্থ ফেরত দিতে বললে অভিযুক্ত শান্ত তা না দেয়ার পায়তারা করতে থাকে। একইসাথে অন্য অভিযুক্ত সিদ্দিক ভিকটিম ইকরামের উপর ক্ষেপে ছিল কারণ সিদ্দিকের ধারণামতে ভিকটিম ইকরাম সিদ্দিকের মাকে তার বেপরোয়া জীবনযাপন নিয়ে বিচার দেয়। যার প্রেক্ষিতে সিদ্দিকের সাথে তার মায়ের ঝগড়া হয় এবং সিদ্দিক গত ৫ দিন ধরে বাসার বাইরে অবস্থান করতে থাকে।
অভিযুক্ত শান্ত ও সিদ্দিক তাদের ক্ষোভের প্রেক্ষিতে ভিকটিম ইকরামকে হত্যা করার পরিকল্পনা সাজায়। গত ০৪/০৫/২০২৩ তারিখ বৃহস্পতিবার শান্ত ভিকটিমকে ফোন করে ডুমনী বালুচর এলাকায় ডেকে নিয়ে আসে এবং পরিকল্পনামাফিক ভ্রমর, হাতুড়ি ও কাঁটার ব্যবহার করে ভিকটিমকে হত্যা করে। পরবর্তী সময়ে ভিকটিমের মৃতদেহ কে পাশের বিলের কচুরিপানা দিয়ে ঢেকে রাখার চেষ্টা করা হয়!
আসামী শান্ত আজ ০৭/০৫/২০২৩ তারিখ নিজের অপরাধ স্বীকারপূর্বক বিজ্ঞ আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেছে। অপর আসামী সিদ্দিকের জন্য ০৭ দিনের রিমান্ড চাওয়া হয়েছে। বিজ্ঞ আদালত দুইদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে।
মাত্র কয়েক ঘন্টার ব্যবধানে ক্লুলেস একটি হত্যাকান্ডের সুরাহা করে খিলক্ষেত থানা পুলিশ।
গুলশান বিভাগের ডিসি জনাব মোঃ আঃ আহাদ বিপিএম (বার), পিপিএম এর নির্দেশনায়, এডিসি ক্যান্টনমেন্ট ইফতেখায়রুল ইসলাম পিপিএম এর নেতৃত্বে, এসি ক্যান্টনমেন্ট মোঃ হুমায়ুন কবীর পিপিএম, ওসি খিলক্ষেত কাজী সাহান ও ইন্সপেক্টর তদন্তের সহায়তায় দুটি টিম পুরো অভিযান পরিচালনা করে।
মামলার তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।