শিরোনাম

South east bank ad

সাবেক ওসি-প্রধান শিক্ষকসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে মামলার নির্দেশ

 প্রকাশ: ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১১:৪১ পূর্বাহ্ন   |   পুলিশ

সাবেক ওসি-প্রধান শিক্ষকসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে মামলার নির্দেশ

কক্সবাজারের চকরিয়া থানার হাজতে সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের অফিস সহকারী দুর্জয় চৌধুরীর (২৫) অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনায় কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতে মামলা করা হয়েছে।

মামলার এজাহারে থানার তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শফিকুল ইসলামসহ চার পুলিশ ও বিদ্যালয়ের সাবেক ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক (বর্তমানে ওএসডি), দুইজন সহকারী শিক্ষক, অপর দুইজন কর্মচারীসহ ৯ জনের নামোল্লেখ এবং আরও পাঁচজনকে অজ্ঞাতসহ ১৪ জনকে আসামি করা হয়েছে।

দুর্জয় চৌধুরীর বাবা কমল চৌধুরী বাদী হয়ে গত ৯ সেপ্টেম্বর করা এই ফৌজদারি দরখাস্তটি আমলে নেন জেলা ও দায়রা জজ আদালতের ভারপ্রাপ্ত জেলা জজ মো.মামুনুর রশিদ। রবিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) তিনি এই দরখাস্তটির শুনানি করেন এবং আগামী ২১ সেপ্টেম্বরের মধ্যে চকরিয়া থানায় এফআইআর হিসেবে রুজু করার নির্দেশ দেন জেলা পুলিশ সুপারকে।

রবিবার শুনানি শেষে এই নির্দেশনা দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাদীপক্ষের কৌঁসুলি অ্যাড. রবীন্দ্র দাশ।

এজাহারনামীয় অভিযুক্তরা হলেন চকরিয়া থানার সাবেক ওসি মো. শফিকুল ইসলাম, পুলিশের এএসআই হানিফ মিয়া, দুই কনস্টেবল (হাজতখানার সেন্ট্রি) মহিউদ্দিন ও ইসরাক হোসেন, চকরিয়া সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক (ইতোমধ্যে ওএসডি) রাবেয়া খানম, দুই সহকারী শিক্ষক মো. জসীম উদ্দিন ও মোস্তফা কামাল, অফিস সহায়ক মো. পারভেজ, নৈশপ্রহরী নুর মোহাম্মদ।

বাদীপক্ষের কৌঁসুলি অ্যাড. রবীন্দ্র দাশ বলেন, গত ২২ আগস্ট চকরিয়া থানা হেফাজত থেকে দুর্জয় চৌধুরীর মরদেহ উদ্ধার করেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রূপায়ন দেব। পরে ২৬ আগস্ট চকরিয়া থানার সাবেক ওসি শফিকুল ইসলাম ও চকরিয়া সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রাবেয়া খানমসহ ৯ জনকে আসামি করে থানায় একটি এজাহার দায়ের করেন দুর্জয় চৌধুরীর বাবা কমল চৌধুরী।
কিন্তু এজাহারটি মামলা হিসেবে রুজু করেনি থানা।

তিনি আরো বলেন, গত ৯ সেপ্টেম্বর জেলা ও দায়রা জজ আদালতে মামলার বাদী কমল চৌধুরী ২০১৩ সালের নির্যাতন ও হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইনের ১৫ ধারা আইনে একটি ফৌজদারি এজাহার দায়ের করেন। পরে আদালতের বিচারক ভারপ্রাপ্ত জেলা জজ মো. মামুনুর রশিদ ১৪ সেপ্টেম্বর (রবিবার) শুনানির দিন ধার্য করেন। আদালতের বিচারক বাদী কমল চৌধুরী এবং মামলার আইনজীবীদের বক্তব্য শোনেন।
এরই পরিপ্রেক্ষিতে বিচারক আগামী ২১ সেপ্টেম্বরের মধ্যে চকরিয়া থানায় এফআইআর হিসেবে রুজুপূর্বক আদালতে লিখিতভাবে জানানোর জন্য পুলিশ সুপার (এসপি) মো. সাইফউদ্দীন শাহীনকে নির্দেশ দেন।

মামলার এজাহারে বাদী (বাবা) কমল চৌধুরী বলেন, গত ২১ আগস্ট বিদ্যালয়ের চেক জালিয়াতি ও নগদ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ তুলে দুর্জয়কে পুলিশের হাতে সোপর্দ করা হয়। আসলে এর আগে ১০-১২ দিন ধরে এই অভিযোগে তাকে মানসিকভাবে চাপে রাখা হচ্ছিল। পরে ২১ আগস্ট আবারও একই অভিযোগে বিদ্যালয়ে ডেকে নিয়ে বিকেল ৫টা পর্যন্ত একটি কক্ষে জিম্মি করে রাখা হয়। পরে রাতে তাকে পুলিশে সোপর্দ করা হয়।
পরদিন শুক্রবার সকালে থানা হাজত খুলে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

চকরিয়া থানা হেফাজতে দুর্জয় চৌধুরীর অস্বাভাবিক মৃত্যু হওয়া নিয়ে কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতে মামলা হওয়ার বিষয়ে কিছুই জানেন না চকরিয়া থানার ওসি তৌহিদুল আনোয়ার। তিনি বলেন, মামলার বিষয়ে আমাদের কাছে কোনো নির্দেশনা আসেনি। নির্দেশনা আসলে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, একই অভিযোগে একই সময়ে চকরিয়া জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আদালতে চার পুলিশ সদস্য ছাড়া বাকি অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি দরখাস্ত দায়ের করা হয়।

এই বিষয়ে চকরিয়া আদালতের অ্যাড. বাদীপক্ষের কৌঁসুলি মিফতাহ্ উদ্দিন আহমেদ কালের কণ্ঠকে জানান, দুর্জয়ের বাবার দায়ের করা ফৌজদারি অভিযোগটির আজকে শুনানি হয়েছে। তবে ব্যক্তিগত কারণে বাদী হাজির হতে না পারায় সময়ের আবেদন দেওয়া হয়েছিল। এরপরও আদালতে এই অভিযোগের শুনানি হয়েছে।

তিনি বলেন, শুনানির সময় আমরা এই ঘটনার জুডিসিয়াল তদন্তের দাবি করেছি। যেহেতু ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্ট হাতে এসেছে এবং সেখানে ভিসেরা রিপোর্ট পাওয়া যায়নি, তাই আদালত ভিসেরা রিপোর্টসহ শুনার জন্য রেখেছেন।

BBS cable ad