South east bank ad

রানা প্লাজার ব্যর্থতা অনেক সুফল বয়ে এনেছে: দুর্যোগ অধিদপ্তরের ডিজি

 প্রকাশ: ১৪ জুন ২০২৩, ১০:১২ অপরাহ্ন   |   মন্ত্রণালয়

রানা প্লাজার ব্যর্থতা অনেক সুফল বয়ে এনেছে: দুর্যোগ অধিদপ্তরের ডিজি
রানা প্লাজার ব্যর্থতার কারণে গার্মেন্টস খাতে বাংলাদেশ অনেক সফলতা বয়ে এনেছে বলে মনে করেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) মো. মিজানুর রহমান। তিনি বলেন, রানা প্লাজার ব্যর্থতার পর বৈশ্বিক গ্রিন স্ট্যান্ডার্ডে দেশের সাতটি গার্মেন্টস স্থান করে নিয়েছে

বুধবার রাজধানীর একটি হোটেলর স্ট্রেংথেনিং আরবান পাবলিক প্রাইভেট প্রোগ্রামিং (সুপার) কনসোর্টিয়াম 'স্মার্ট বাংলাদেশে দুর্যোগ ঝুঁকি ব্যবস্থাপনায় প্রাইভেট সেক্টর এবং মিডিয়ার সম্পৃক্ততা' শীর্ষক এক অধিবেশনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এমন মন্তব্য করেন। ৭ম আরবান ডায়ালগ- ২০২৩ এর অংশ হিসেবে এই আয়োজন করা হয়।

মিজানুর রহমান বলেন, ‘প্রতি বছর ঢাকায় এক লাখ ভবন হচ্ছে। কিন্তু বিল্ডিং কোড মানা হচ্ছে না। সীতাকুণ্ডে এক দুর্ঘটনা কিন্তু অনেক বড় ম্যাসেজ দিচ্ছে। সেখানে ঢাকার মতো শহরে যদি ভূমিকম্প হয় তবে ম্যাসাকার অবস্থা হবে। ভবন ধ্বসের পাশাপাশি বিস্ফোরণ ও আগুনের ঘটনা ঘটবে।’

যেকোনো দুর্যোগে এখন প্রচুর দর্শক ও কাজের চেয়ে অকাজের লোকের জমায়েত বেশি হয় মন্তব্য করে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের ডিজি মিজানুর রহমান বলেন, ‘অগ্নিকাণ্ডের মতো দুর্ঘটনায় জনসমাগমের কারণে ফায়ার সার্ভিস কর্মীদের বেগ পেতে হয়। যেকোনো দুর্যোগে এখন প্রচুর দর্শক। কাজের চেয়ে অকাজের লোক বেশি হয়। ঢাকায় আর ভলান্টিয়ারের দরকার নেয়। এখন ভলান্টিয়ার দরকার ঢাকার বাইরে। যাতে ঢাকা দুর্যোগে পতিত হলে ভলান্টিয়াররা এসে কাজ করতে পারেন।’

সম্প্রতি ঘূর্ণিঝড় মোখায় আমাদের কক্সবাজার, সেন্টমার্টিনে মৃত্যুর সংখ্যা শূন্য উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘সাইক্লোন ও ফ্লাড সেন্টার তৈরি, জনবল নিয়োগ, ভলান্টিয়ারদের কল্যাণে এখন দুর্যোগে মৃত্যুহার কমছে। কিন্তু মিয়ানমারে ৫০০ মানুষ মারা গেলো। যদিও এখনো মিয়ানমার সরকার তা ঘোষণা করেনি।’

‘মোখায় আমরা সরকারিভাবে অনেক ব্যবস্থাগ্রহণ করেছি। দুর্যোগের ক্ষেত্রে সমন্বিত উদ্যোগের ব্যাপার। নিজেরা যদি সচেতন না হয় তাহলে ছোট দুর্যোগও বড় ক্ষতির সম্মুখীন করবে। যদি সঠিক সময় সঠিক উদ্যোগ গ্রহণ না করি তাহলে আমরা বড় দুর্যোগে পতিত হব।’

রানা প্লাজার দুর্ঘটনা প্রসঙ্গ টেনে মিজানুর রহমান বলেন, ‘রানা প্লাজার ব্যর্থতা কিন্তু এই খাতে অনেক সুফল বয়ে এনেছে। এখন বৈশ্বিক গ্রিন স্টান্ডার্ডে সাতটি গার্মেন্টস বাংলাদেশের।’

বঙ্গবাজারের আগুনের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘বঙ্গবাজারের আগুন জিরো গ্রাউন্ডে গিয়ে শেষ হয়েছে। এই আগুন কিন্তু পুরো ঢাকা শহরকে পুড়িয়ে ফেলতে পারতো। বঙ্গবাজারের কাপড় এতো বেশি ছিল যা পেট্রলের মতো আগুন জ্বলেছে৷ যেখানে ৫০টা দোকান হয় না, সেখানে হাজার হাজার দোকান। ভাগ্যভালো কাছেই শহীদুল্লাহ্ হলের পুকুর ছিল, যেখানে থেকে পানির সরবরাহ করা গেছে। অথচ আমরা বঙ্গবাজার মার্কেটে যদি দুই কোটি টাকা খরচ করে সেফটি সিকিউরিটির ব্যবস্থাগ্রহণ করতাম তালে আজ এতো বড় ক্ষতির সম্মুখিন হতাম না।’

অনুষ্ঠানে অ্যাকশন এইড বাংলাদেশের সুপার প্রকল্পের কনসোর্টিয়াম ম্যানেজার আ ম নাছির উদ্দিন দুর্যোগ ঝুঁকি ব্যবস্থাপনায় প্রাইভেট সেক্টর এবং মিডিয়াকে সম্পৃক্তকরণ এবং দুর্যোগ ঝুঁকি (আগুন ও জলাবদ্ধতা) নিরসনে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যবহার বিষয়ে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। এসময় আলোচকরা একটি দুর্যোগসহনশীল নগর গড়ে তোলার জন্য বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা এবং সুপারিশ দেন। তারা ব্যক্তিখাতের জরুরি সাড়াদান দল বা প্রাইভেট সেক্টর ইমারজেন্সি রেস্পন্স টিম (পিইআরটি) এবং পিইওসি সংগঠিত ভাবে পরিচালিত করার জন্য স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিওরের (এসওপি) ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন।

ইউরোপিয়ান সিভিল প্রোটেকশন অ্যান্ড হিউম্যানিটারিয়ান এইড অপারেশনসের (ইকো) অর্থায়নে স্ট্রেংথেনিং আরবান পাবলিক প্রাইভেট প্রোগ্রামিং (সুপার) প্রকল্পটি অ্যাকশনএইড বাংলাদেশ, ঢাকা চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই), ইউনাইটেড পারপাস এবং ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশ যৌথভাবে বাস্তবায়ন করেছে। জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী অফিস (UNRCO) এই প্রকল্পের জন্য কৌশলগত সহায়তা সংস্থা হিসেবে কাজ করছে।

অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন- ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশের প্রোগ্রাম ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড কোয়ালিটি অ্যাসুরেন্সের পরিচালক সাগর মারান্ডি, সমকালের উপদেষ্টা সম্পাদক আবু সাঈদ, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের সিএসই বিভাগের অধ্যাপক ড. খলিলুর রহমান, ডিসিসিআই'র জয়েন্ট এক্সিউটিভ সেক্রেটারি এবং পিইওসি-এর ফোকাল পারসন খন্দকার আনোয়ার কামাল এবং ইউনাইটেড পারপাসের বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর শ্রীরামাপ্পা গণচিকারা।
BBS cable ad

মন্ত্রণালয় এর আরও খবর: