শিরোনাম

South east bank ad

শ্রীলঙ্কার পর এবার ফিলিপাইন থেকে রিজার্ভের ৮১ মিলিয়ন ডলার আনার প্রক্রিয়ায় সিআইডি

 প্রকাশ: ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৭:২৪ অপরাহ্ন   |   সিআইডি

শ্রীলঙ্কার পর এবার ফিলিপাইন থেকে রিজার্ভের ৮১ মিলিয়ন ডলার আনার প্রক্রিয়ায় সিআইডি


রিজার্ভ চুরির মামলায় আরসিবিসি ব্যাংকের ৮১ মিলিয়ন ডলার বাজেয়াপ্তের বিষয়ে বাংলাদেশের আদালতের দেওয়া রায় ফিলিপাইনের না মানার কোনো কারণ নাই বলে জানিয়েছেন সিআইডি প্রধান অতিরিক্ত আইজিপি মো. ছিবগাত উল্লাহ।

রবিবার বিকালে সিআইডি হেডকোয়ার্টার এর মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন তিনি।


এ ঘটনার সঙ্গে রাজনৈতিক ব্যক্তিসহ কে কে জড়িত আছে? জানতে চাইলে ছিবগাত উল্লাহ বলেন, অনেকেরই নাম আমরা পেয়েছি। তবে তদন্তের স্বার্থে আমরা এখন প্রকাশ করতে পারছি না।

সিআইডি প্রধান বলেন, ২০১৬ সালে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে সাইবার জালিয়াতির মাধ্যমে চুরি হওয়া ৮১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বাজেয়াপ্তের নির্দেশ দিয়েছে ঢাকার জেষ্ঠ্য বিশেষ জজ আদালত। ফিলিপাইনের আরসিবিসি ব্যাংক ৮১ মিলিয়ন ডলার পাচারে জড়িত ছিল।


তিনি বলেন, সিআইডির আবেদনের প্রেক্ষিতে এবং প্রাপ্ত তথ্য ও আলামত, ফিলিপাইন সরকারের সরবরাহকৃত পারস্পরিক আইনি সহায়তা অনুরোধ এর মাধ্যমে সংগৃহীত সাক্ষ্যের ভিত্তিতে আদালত মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ (সংশোধিত ২০১৫), ধারা ১৭(২)(৭) এর আওতায় আরসিবিসি ব্যাংক থেকে ৮১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বাজেয়াপ্তের নির্দেশ দেন।

তিনি আরও বলেন, আরসিবিসি এর তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ও সিইও লরেঞ্জো ট্যান জুপিটার ব্রাঞ্চের ম্যানেজার মাইয়া সান্তোস ডিগুইতো এবং ব্যাংকের প্রধান কার্যালয় ও জুপিটার ব্রাঞ্চের আরও কয়েকজন কর্মকর্তা ৫টি ভুয়া অ্যাকাউন্ট খোলার মাধ্যমে চুরি হওয়া অর্থ পাচারে সরাসরি জড়িত ছিলেন বলে তদন্তে প্রমাণিত হয়েছে।


ছিবগাত উল্লাহ বলেন, ফিলিপাইনের আদালত ইতিমধ্যেই সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের দোষী সাব্যস্ত করেছে এবং দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংক আরসিবিসি-এর ওপর বড় অঙ্কের জরিমানা আরোপ করেছে। ২০১৬ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি আরসিবিসি মাত্র ৬৮ হাজার মার্কিন ডলার বাংলাদেশ ব্যাংকে ফেরত দিয়েছিল, যা তাদের পক্ষ থেকে অর্থ ফেরতের প্রথম পদক্ষেপ ছিল।

তিনি বলেন, আরসিবিসি থেকে বাজেয়াপ্ত হওয়া পুরো ৮১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বাংলাদেশ সরকারের কোষাগারে ফেরত পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। এ সংক্রান্ত আদেশ বাস্তবায়নের জন্য কপি বাংলাদেশ ও ফিলিপাইনের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে প্রেরণ করা হচ্ছে। জাতিসংঘের ইউএনটিওসি ফিলিপাইনের আইন এবং এফএটিএফ নির্দেশনার আলোকে বাংলাদেশ সরকার এখন ফিলিপাইন সরকারের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে এই অর্থ ফেরত আনার ব্যবস্থা করবে, যাতে বাজেয়াপ্তির আদেশ কার্যকর হয় এবং পাচার হওয়া অর্থ পুরোপুরি ফেরত আসে।


এদিকে রিজার্ভ চুরির টাকা শ্রীলঙ্কাতেও চলে গিয়েছিল। দেশটির কর্তৃপক্ষ যখন বুঝতে পারে এটা মানি লন্ডারিংয়ের টাকা, তখন তারা বাংলাদেশকে সে অর্থ ফিরিয়ে দেয়।

রিজার্ভ চুরির সঙ্গে শেখ হাসিনার পরিবারের কারও সংশ্লিষ্টতা আছে কিনা জানতে চাইলে অতিরিক্ত আইজিপি মো. ছিবগাত উল্লাহ বলেন, আমরা তদন্তের শেষ পর্যায়ে পৌঁছেছি। এই ঘটনার সঙ্গে দেশি বা বিদেশি যেভাবেই জড়িত থাকুক না কেন, তাদের সবাইকে আইনের আওতায় আনা হবে। তদন্ত শেষ হলে দ্রুত আদালতে চার্জশিট জমা দেওয়া হবে। কোনও সংশ্লিষ্টকে ছাড় দেওয়া হবে না। আমরা এই বিষয়টি গুরুত্বসহকারে দেখছি।

সংবাদ সম্মেলনে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের স্পেশাল প্রসিকিউটর অ্যাডভাইজার অ্যাডভোকেট এহসানুল হক সমাজী বলেন, সিআইডির আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিশেষ আদালত ফিলিপাইনের আরসিবিসি ব্যাংকে পাচারকৃত ৮১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বাজেয়াপ্তের নির্দেশ দিয়েছে। এই আদেশের অনুলিপি ফিলিপাইনের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়েছে যাতে তারা প্রশাসনিকভাবে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়। এটি সম্পূর্ণ একটি প্রশাসনিক প্রক্রিয়া এবং প্রক্রিয়া শেষ হলে টাকা দেশে ফিরবে বলে তিনি আশা করেন।
BBS cable ad

সিআইডি এর আরও খবর: