টাকা আত্মসাতের অভিযোগে স্কুল শিক্ষিকা গ্রেপ্তার

সুশান্ত কুমার সরকার, (পাবনা) :
হালাল উপার্জনের প্রলোভনে ফেলে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগে পাবনায় এক স্কুল শিক্ষিকাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বুধবার দুপুরে তাকে আদালতে সোপর্দ করলে আদালত তাকে জেল হাজতে পাঠান। এর আগে মঙ্গলবার রাতে তার বাড়ি থেকে আটক করা হয়। পরে ওই রাতেই ভুক্তোভোগী একজন তার বিরুদ্ধে মামলা করেন। পাবনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা অমিনুল ইসলাম গ্রেপ্তার ও মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
জানা গেছে, অধিক লোভে পড়ে প্রতারণার শিকার ভূক্তভোগীর মঙ্গলবার দিনভর ওই নারীর বাড়িতে তাকে অবরুদ্ধ করে যখন বিক্ষোভ করছিলেন; তখন খবর পেয়ে পুলিশ তার বাড়ি থেকে আটক করে। এই অভিযোগে ইতোমধ্যেই পুলিশ লাইনস স্কুল এন্ড কলেজ কর্তৃপক্ষ ওই শিক্ষিকাকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করেছে।
টাকা হারানো ভুক্তভোগীরা জানান, পাবনা পৌর এলাকার আটুয়া হাউজ পাড়া মহল্লার মৃত হানিফুল ইসলামের স্ত্রী ও পুলিশ লাইনস স্কুল এন্ড কলেজের প্রাথমিক শাখার শিক্ষিকা মোছাঃ সীমা আক্তার (৪০) মানুষকে ইসলামী শরিয়া মোতাবেক গরুর খামার ও আরো নানা ধরণের হালাল উপর্জনের কথা বলে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন।
সাধারণ মানুষ তার কথায় সরল বিশ্বাসে লাভের আশায় তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে অর্থ বিনিয়োগ করে। টাকার অংক বেড়ে গেলে তিনি সমস্ত টাকা আত্মসাত করে গা ঢাকা দেন। তখন বিনিয়োগকারিরা টাকা হারানো বেদনায় দিশেহারা হয়ে পড়েন। ওই শিক্ষিকার বাড়িতে শুরু হয় টাকা আদায়ে বিনিয়োগকারিদের ধরণা। অবশেষে বিক্ষোভ, অবরোধ। পুলিশ আটক করে ওই শিক্ষিকাকে।
পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করায় অভিযোগের বিষয়ে সীমা আক্তারের সাথে কথা বলা সম্ভব হয়নি। তবে পুলিশ কর্মকর্তাগণ তার বিরুদ্ধে অভিযোগের বিষয়ে বলেন, এধরণের অভিযোগে অবশ্য তাকে আটক করা হয়।
জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার স্নিগ্ধ আখতার বলেন, এই ঘটনার বিষয়ে আমরা অবগত হয়েছি। তার বিরুদ্ধে এই ধরণে অভিযোগের কারণে তাকে স্কুল থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে। তার প্রতারণার বিষয়ে আমাদের কাছে লিখিত অভিযোগ নিয়ে এসেছিলেন ভুক্তভোগীরা। আমরা তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছি। অনেকেই তার বিরুদ্ধে তথ্য প্রমাণ নিয়ে এসেছেন। এর সত্যতার ভিত্তিতে তার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।
এই দু’পুলিশ কর্মকর্তা আরো বলেন, ‘ভুক্তভোগীরা তার বাড়িতে তাকে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত অববরুদ্ধ করে রেখেছিলো। সেখান থেকে তাকে উদ্ধার করে থানাতে নিয়ে আসা হয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করে দেখার পর এর সত্যতা মেলে।’
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ডেভিড হিমাদ্রি বর্মা বলেন, ভুক্তোভোগী মাবেলা পারভীন শিল্পী বাদী হয়ে সীমা আক্তারের বিরুদ্ধে পাবনা থানায় মামলা করেছেন। মামলায় তিনি ৭ লাখ টাকা আত্মসাতের তথ্য উল্লেখ করেছে। এছাড়াও তার মতো অনেক মানুষের কাছ থেকে বিপুল পরিমান অর্থ নিয়ে তিনি আত্মসাৎ করেছেন বলে উল্লেখ করা হয়েছে। এই মামলায় বুধবার দুপুরে পুলিশ সীমা আক্তারকে আদালতে পাঠালে আদালত তাকে জেল হাজতে পাঠান।