মানুষের দোরগোড়ায় সেবা পৌঁছে দিতেই বিট পুলিশিং কার্যক্রমঃ এম এম শাকিলুজ্জামান

খন্দকার রবিউল ইসলাম (রাজবাড়ী):
“পুলিশ বাহিনীকে আরও বেশি জনমুখী করতে, মানুষের দোরগোড়ায় পুলিশি সেবা পৌঁছে দিতে সারাদেশে বিট পুলিশিং কার্যক্রম চালু হয়েছে। তারিই ধারাবাহিকতায় রাজবাড়ীতে এখন থেকে পুলিশ জনগণের দ্বারে দ্বারে গিয়ে পুলিশি সেবা পৌঁছে দেবে।
২১জুন সোমবার দুপুরে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে রাজবাড়ী জেলায় কর্মরত বিভিন্ন প্রিন্ট,ইলেকট্রনিক ও অনলাইন মিডিয়ার সংবাদ কর্মীদের সাথে আলাপকালে এসব কথা বলেন পুলিশ সুপার এমএম শাকিলুজ্জামান।
প্রেস ব্রিফিং পুলিশ সুপার বলেন, বিট পুলিশং এর সেবা প্রতিটি বাড়ি বাড়ি পৌছেঁ দিতে ঢাকা রেঞ্জ এর ডিআইজি হাবিবুর রহমান স্যারের নির্দেশনায় রাজবাড়ী জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে ১লাখ স্টিকার করা হয়েছে। স্টিকারটিতে স্ব স্ব বিট পুলিশিং এলাকার দােিয়ত্বে থাকা পুলিশ অফিসার ও থানার ডিউটি অফিসারের নাম্বার দেওয়া আছে। আমরা স্টিকার প্রতিটি বাড়ি বাড়ি গিয়ে দরজায় দরজায় লাগিয়ে দিব। যাতে মানুষ যে কোন সমস্যায় সেই বিট পুলিশিং এর দায়ীত্বে থাকা অফিসারকে সাথে সাথে ফোন করে তার সমস্যার কথা জানাতে পারে। আমরা চাই সাধারন মানুষ জানুক পুলিশ এখন জনবান্ধব। তিনি বলেন, বিট পুলিশিংয়ের মূল ধারণা হচ্ছে, পুলিশ কর্মকর্তারাই মানুষের কাছে তৃনমূল পর্যায়ে সেবা নিয়ে যাবেন। ওয়ার্ড এবং শহরের মহল্লাগুলোকে বিটে বিভক্ত করে একজন উপ-পুলিশ পরিদর্শককে (এসআই) এর দায়িত্ব দেওয়া হবে। দায়িত্বপ্রাপ্ত এ পুলিশ কর্মকর্তারাই এলাকার আইন-শৃঙ্খলাসহ সার্বিক বিষয়ে খোঁজ রাখবেন ও প্রাথমিকভাবে ব্যবস্থা নেবেন। এর মাধ্যমে সমাজ থেকে মাদক, ইভটিজিং, চুরি, ডাকাতিসহ সব ধরনের অপরাধমুলক কাজ কমে আসবে। মানুষ শান্তিতে বসবাস করতে পারবে। পুলিশ ও জনগণের মধ্য সম্পর্কের সেতুবন্ধন তৈরি হবে।
রাজবাড়ী অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ সালাউদ্দিন বলেন, আমরা বিট পুলিশিং কার্যক্রমের মাধ্যমে পুলিশি সেবা নিয়ে জনগণের আরও কাছে যেতে চাই। মানুষের হৃদয় জয় করতে চাই। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার দেশ গড়তে প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে একটি স্বনির্ভর সোনার বাংলাদেশ গড়ে তুলতে চাই।
রাজবাড়ী সদর থানার ওসি মোঃ শাহাদত হোসেন বলেন, সমাজে ছোট ছোট অপরাধ থেকেই বড় বড় অপরাধের সৃষ্টি হয়। বিট পুলিশিং কার্যক্রমের মাধ্যমে সব স্তরের মানুষকে নিয়ে একটি সমন্বিত উদ্যোগে সমাজ থেকে সব ধরনের অপরাধ দূর করে অপরাধ মুক্ত একটি সুন্দর সমাজ ব্যাবস্থা গড়ে তুলতে চাই।
বীট পুলিশিং হল কোন একটি নির্দিষ্ট এলাকায় কিছু নির্দিষ্ট সংখ্যক বা বিশেষ পুলিশ সদস্যদের স্থায়ীভাবে দায়িত্ব পালন করা। আমাদের শহর এলাকাগুলোকে কয়েকটি বীটে ভাগ করে প্রত্যেকটি বীটের দায়িত্ব ঐ স্থানে অবস্থিত পুলিশ ফাঁড়ির উপর ন্যাস্ত করা হয়। এই ধারণাটি এসেছে লন্ডন মেট্রোপলিটন পুলিশের কার্যপদ্ধতি থেকে। জাপানের কোবান পদ্ধতিতেও প্রতিটি কোবান বা পুলিশ বক্সের অধীন একটি নির্দিষ্ট এলাকা রয়েছে। এই সব এলাকায় কিছু পুলিশ অফিসার ঊর্ধতন কর্মকর্তাদের প্রত্যক্ষ নিয়ন্ত্রণের বাইরে থেকে নিজস্ব বিবেচনা শক্তি প্রয়োগ করে সেই এলাকায় পুলিশিং করে থাকেন। এক্ষেত্রে তিনি তার নির্ধারিত এলাকায় অপরাধ সমস্যা সমাধানের ক্ষেত্রে এলাকাবাসীর নিকট গৃহ-ডাক্তারের মতোই কাজ করেন। কোবান, বিট বা কমিউনিটি পুলিশিং অফিসার এলাকার মানুষের কাছে তাদের নিজেদের পুলিশ অফিসার বলেই প্রতীয়মান হবে। তিনি এলাকাবাসীদের সাথে স্থানীয় সুখ-দুঃখের অংশীদার হবেন। তিনি এলাকায় কেবল আইন প্রয়োগ বা শৃঙ্খলা রক্ষা নয়, এলাকার সকল সমস্যা সমাধানের নিয়ামক শক্তি বা প্রভাবক হিসেবে কাজ করবেন।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সহকারী পুলিশ সুপার মো: সালাউদ্দিন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সদর (সার্কেল) মোঃ শরিফজ্জামন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হেটকোয়াটার আনিসউজ্জামন, ডিআইওয়ান মোঃ সাইদুর রহমান, সদর থানার ওসি মোঃ শাহাদত হোসেন, গোয়ালন্দ থানার ওসি আব্দুল্লাহ আল তায়াবির, কালুখালি থানার ওসি মোঃ নাজমুল হাসান, পাংশা থানার ওসি মোহাম্মদ মাসুদুর রহমান, বালিয়াকান্দি থানার ওসি তারিকুজ্জামান, প্রেসক্লাবের সহসভাপতি কাজী আব্দল কুদ্দুস বাবু, দৈনিক প্রতিদিনের সংবাদ ও বাংলাদেশ পোষ্ট এর জেলা প্রতিনিধি রবিউল ইসলাম খন্দকার সহ বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমকর্মীরা।