South east bank ad

থানা লুটের অস্ত্র অপরাধীদের হাতে

 প্রকাশ: ০১ জুলাই ২০২৫, ১২:২৫ অপরাহ্ন   |   পুলিশ

থানা লুটের অস্ত্র অপরাধীদের হাতে

ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর চট্টগ্রাম নগরের বিভিন্ন থানা থেকে লুট হওয়া ১৫৭টি অস্ত্র এখনো হদিস মেলেনি। এসব অস্ত্রের মধ্যে চাইনিজ রাইফেল, শটগান, এসএমজি এবং অন্যান্য বড় অস্ত্র জলদস্যু ও পার্বত্য চট্টগ্রামের বিভিন্ন অপরাধীদের হাতে চলে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন পুলিশ কর্মকর্তারা।
এদিকে, লুট হওয়া অস্ত্র উদ্ধার করতে পুলিশ অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে, তবে এখনও বড় অস্ত্রগুলোর সঠিক অবস্থান জানা যায়নি। গত নভেম্বর মাসে মহেশখালী উপজেলার কালারমারছড়া ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের মোহাম্মদ শাহ ঘোনা এলাকা থেকে পুলিশের লুট হওয়া একটি পিস্তল, একটি দেশি পিস্তল, দুটি ম্যাগজিন এবং ২২ রাউন্ড কার্তুজ জব্দ করে কোস্টগার্ড।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ২০২৪ সালের আগস্টে চট্টগ্রামের বিভিন্ন থানায় অগ্নিসংযোগ, ভাঙচুর এবং লুটপাটের ঘটনা ঘটে, যার ফলে মোট ৮১৩টি অস্ত্র লুট হয়। এর মধ্যে ছোট অস্ত্রগুলো ধীরে ধীরে উদ্ধার করা হলেও, চাইনিজ রাইফেল, শটগান, এসএমজি এবং অন্যান্য বড় অস্ত্রগুলি এখনও উদ্ধার হয়নি। এসব অস্ত্রের বেশ কিছু অংশ বর্তমানে বিভিন্ন অপরাধী চক্রের হাতে চলে গেছে, বিশেষ করে জলদস্যু এবং পার্বত্য অঞ্চলের অপরাধীদের কাছে।

চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ বর্তমানে লুট হওয়া অস্ত্র উদ্ধারের জন্য নিয়মিত অভিযান চালাচ্ছে। গত কয়েক মাসে ছোট আগ্নেয়াস্ত্রের বেশ কিছু উদ্ধার হয়েছে, তবে বড় অস্ত্রগুলোর খোঁজ এখনো মেলেনি। পুলিশের ধারণা, এসব অস্ত্র জলদস্যুদের এবং পার্বত্য চট্টগ্রামের অপরাধী চক্রের হাতে চলে গেছে, যা নিরাপত্তা পরিস্থিতির জন্য বড় ধরনের হুমকি সৃষ্টি করতে পারে।

চট্টগ্রামের পাহাড়তলী থানা এবং কোতোয়ালী থানায় গত কয়েক মাসে অভিযান চালিয়ে বেশ কয়েকটি অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে, যা থানা লুটের সময় চুরি হয়েছিলো। পুলিশের দাবি, এসব অস্ত্র ছিনতাইকারীরা ব্যবহার করত, এবং তাদের মাধ্যমে এসব অস্ত্র নাগরিকদের ওপর ছিনতাই এবং ডাকাতি করার কাজে ব্যবহৃত হচ্ছিলো। সাম্প্রতিক সময়ে গ্রেপ্তার হওয়া ছিনতাইকারীদের কাছ থেকেও থানা থেকে লুট হওয়া ছোট অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে।

পুলিশ কর্মকর্তারা জানান, ছোট অস্ত্রের মধ্যে বেশিরভাগ উদ্ধার হলেও বড় অস্ত্রগুলো উদ্ধার করা এখনও কঠিন হয়ে পড়েছে। তারা ধারণা করছেন, চাইনিজ রাইফেল, শটগান, এসএমজি এবং অন্যান্য ভারী অস্ত্রগুলো জলদস্যুদের এবং পার্বত্য চট্টগ্রামের অপরাধীদের হাতে চলে যেতে পারে, যা এই অঞ্চলে নিরাপত্তা পরিস্থিতি আরো সংকটাপন্ন করতে পারে।

পুলিশের আরও আশঙ্কা, এসব অস্ত্রের সাহায্যে জলদস্যুরা উপকূলীয় এলাকায় তাদের কার্যক্রম আরও বৃদ্ধি করতে পারে, আর পার্বত্য অঞ্চলের অপরাধীরা এসব অস্ত্র দিয়ে স্থানীয়দের ভয়ভীতি দেখিয়ে তাদের কার্যক্রম চালিয়ে যেতে পারে।

চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ পুলিশ কমিশনার (পশ্চিম) হোসাইন মোহাম্মদ কবির ভূঁইয়া জানান, আমরা নিয়মিতভাবে অস্ত্র উদ্ধারের অভিযান চালাচ্ছি এবং আশাবাদী যে, শিগগিরই এসব অস্ত্র উদ্ধার করতে সক্ষম হবো। তবে আমাদের চ্যালেঞ্জ হচ্ছে বড় অস্ত্রগুলোর অবস্থান শনাক্ত করা।

তিনি আরও বলেন, যতদিন না বড় অস্ত্রগুলো উদ্ধার হচ্ছে, ততদিন নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে সংশয় থেকেই যাবে। তবে আমরা আশাবাদী যে, আমাদের অভিযান সফল হবে এবং এসব অস্ত্র আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে ফিরিয়ে দেওয়া যাবে।

এদিকে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি স্থানীয় জনগণও আশঙ্কা, এসব অস্ত্র ব্যবহারের ফলে তাদের নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়তে পারে, বিশেষ করে উপকূলীয় ও পার্বত্য অঞ্চলের মানুষদের জন্য এটি বড় ধরনের সংকট তৈরি করতে পারে।

BBS cable ad