South east bank ad

চলন্ত ট্রেনে পাথর নিক্ষেপ প্রতিরোধে রেলওয়ে পুলিশের জনসচেতনতা সৃষ্টি

 প্রকাশ: ১৪ অক্টোবর ২০২১, ০২:২৩ অপরাহ্ন   |   পুলিশ

চলন্ত ট্রেনে পাথর নিক্ষেপ প্রতিরোধে রেলওয়ে পুলিশের জনসচেতনতা সৃষ্টি
সাম্প্রতিক সময়ে চলন্ত ট্রেনে পাথর নিক্ষেপের প্রবণতা দেখা যাওয়ায় পাথর নিক্ষেপ প্রতিরোধে রেলওয়ে পুলিশের মাধ্যমে জনসচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে কার্যক্রম চলমান রয়েছে। চলন্ত ট্রেনে অসচেতনতার কারণে পাথর নিক্ষেপের ফলে অনেক সময় ট্রেন যাত্রী আহত হন এবং সরকারি সম্পত্তি ক্ষতি সাধিত হয়ে থাকে। অনেক সময় দেখা যায় কেউ মজাচ্ছলে চলে বা খেলাচ্ছলে পাথর নিক্ষেপ করে থাকে। 

কিন্ত এতে অনেক সময় মারাত্বক দূর্ঘটনা সংঘটিত হতে পারে। একটি দূঘর্টনা মানে সারা জীবনের কান্না। এ দূর্ঘটনায় আক্রান্ত ব্যক্তি আমাদের যেকোন কারও পরিবারের সদস্য হতে পারে, হতে পারে কারও মা, হতে পারে কারও বাবা, হতে পারে কারও ভাই-বোন, ও কারও সন্তান, এতে একটি পরিবারের অপূরণীয় ক্ষতি হয়ে থাকে।

সুতরাং পাথর নিক্ষেপ প্রতিরোধে হটস্পট স্থানগুলো চিহিৃত করে জনসচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে  স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, স্কুলের শিক্ষক, মসজিদের ইমামসহ, রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনী, স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনসহ জনসাধারণকে সম্পৃত্ত করে গত ৪ অক্টোবর ২০২১ইং তারিখ থেকে প্রতিদিন জনসচেতনতামূলক সভাগুলো করা হচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকবে।

ইতোমধ্যে চট্টগ্রাম রেলওয়ে থানার আওতাধীন বাড়বকুন্ড রেলওয়ে স্টেশন, ভাটিয়ারী রেলওয়ে স্টেশন, ফৌজদারহাট রেলওয়ে স্টেশন, পাহাড়তলী রেলওয়ে স্টেশন, কুমিরা রেলওয়ে স্টেশন বারৈয়াঢালা রেলওয়ে স্টেশন, ফুলতলা রেলওয়ে এলাকায়, লাকসাম রেলওয়ে থানার আওতাধীন আলী শহর রেলওয়ে স্টেশন, ময়নামতি রেলওয়ে স্টেশন, গুনটি ব্রীজ এলাকা, শশীদল রেলওয়ে স্টেশন, ফাজিলপুর রেলওয়ে স্টেশন, লাকসাম রেলওয়ে স্টেশন, লালমাই রেলওয়ে স্টেশনে জনসচেতনতামুলক সভা করা হয়েছে। 

উক্ত সভাগুলোতে অভিভাবকরা যেন তাদের সন্তানদের পাথর নিক্ষেপের কুফল সম্পর্কে বর্ণনা করেন, তার জন্য বলা হয়েছে। স্কুলের শিক্ষকরা যাতে পাঠদানের সময় ছাত্রছাত্রীদের পাথর নিক্ষেপের কুফল সম্পর্কে বর্ণনা করেন, তার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। 
মসজিদের ইমামরা জুমার নামাজের খুতবার আগে মুসল্লিদের পাথর নিক্ষেপের কুফল সম্পর্কে অবহিত করেন, তার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। 

সর্বোপরি রেললাইনের বরাবর বসবাসকারী জনসাধারণ যাতে নিজেরা সচেতন হন এবং তাদের সন্তানদের সচেতন করেন তার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। পাথর নিক্ষেপ প্রতিরোধে রেলওয়ে পুলিশের পক্ষ হতে লিফলেট বিতরণ করা হচ্ছে এবং মোটিভেশন করা হচ্ছে।

সুতরাং আমরা সাংবাদিকদেরকে আপনাদেরকে বিনীতভাবে অনুরোধ করছি আপনারা যাতে নিয়মিতভাবে পাথর নিক্ষেপের কুফলের বিষয়ে প্রচার করে খেলার চলে বা মজার চলে পাথর নিক্ষেপ হতে বিরত রাখার সহায়তা করুন। সবাই নিজে নিজের অবস্থান থেকে সচেতন থেকে সচেতনতামূলক কার্যক্রম চালালে, গণ্যমান্য ব্যক্তিরা তাদের আশেপাশে সবাইকে সচেতনতার উপদেশ দিলে, শিক্ষকরা পাঠদানে ছাত্র/ছাত্রীদের পাথর নিক্ষেপের কুফল সম্পর্কে বর্ণনা করলে, ইমাম সাহেবরা জুমার নামাজে খুতবার আগে মুসল্লিদের পাথর নিক্ষেপের কুফল সম্পর্কে অবহিত করলে ক্রমান্বয়ে সবাই সচেতন হবেন এবং পাথর নিক্ষেপের মত ঘৃন্য কাজ বন্ধ হবে।

চট্টগ্রাম রেলওয়ে পুলিশ পাথর নিক্ষেপ প্রতিরোধে জনসচেতনতামুলক কার্যক্রম যেমন চালু রেখেছে তেমনি পাথর নিক্ষেপকারীদের সনাক্তের কাজ করে চলছে এবং কেউ সচেতন না হলে তাকে আইনের আওতায় আনা হবে। এক্ষেত্রে আমরা রেললাইন বরাবর বসবাসকারী অভিভাবক, গণ্যমান্য ব্যক্তিরা আমরা আপনাদের মাধ্যমে আহ্বান করছি তারা যেন সবাইকে সচেতন করার পাশাপাশি কেউ আইন অমান্য করে পাথর নিক্ষেপ করলে তাকে যেন আইনের আওতায় আনার জন্য সোর্পদ করেন।

চলন্ত ট্রেনে পাথর নিক্ষেপ একটি অপরাধ। এই আইনে (১)১৮৯০ সালের বাংলাদেশ রেলওয়ে আইনের ১২৭ ধারায় ট্রেনে পাথর নিক্ষেপের জন্য যাবজ্জীবন জেল অথবা ১০ বছর কারাদণ্ডের বিধান রয়েছে (২) উদ্দেশ্যেমুলকভাবে পাথর নিক্ষেপে রেলযাত্রীর মৃত্যুর কারণ প্রমাণিত হলে দণ্ডবিধি ৩০২ ধারায় মৃত্যুদণ্ড বা যাবজ্জীবন কারাদণ্ড তদুপরি জরিমানার বিধান রয়েছে (৩) ১৮৯০ সনের রেলওয়ে আইন অনুয়ায়ী অপ্রাপ্ত বয়স্ক সন্তানের অপরাধের ক্ষেত্রে অভিভাবকের শাস্তির বিধান রয়েছে।

গত ৭ অক্টোবর ২০২১ইং তারিখ ফাজিলপুর রেলওয়ে স্টেশনের পশ্চিম আউটারে সকাল ১০.১৫ মিনিটে সিলেটগামী পাহাড়িকা এক্সপ্রেস ট্রেনে পাথর নিক্ষেপের খবর পাওয়া যায়। 
উক্ত খবর পাওয়ার পর রেলওয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পাথর নিক্ষেপকারী আ. আজিজকে সনাক্ত করেন। পরবর্তীতে পাথর নিক্ষেপকারী আ. আজিজ এবং তার পিতা জিয়াউল হক (৪২) পিতা-মৃত আ. কাদির, সাং-ফাজিলপুর, থানা ও জেলা-ফেনীকে আদালতে উপস্থাপন করেন এবং আদালত আইনগত পদক্ষেপ নেন।

পাথর নিক্ষেপ করলে রেলওয়ে আইনের ১২৭, ১২৮, ১২৯ এবং ১৩০ ধারার শাস্তির বিধান রযেছে। এক্ষেত্রে আমরা অপরাধীকে সনাক্ত করে মামলা রুজু করে আইনের আওতায় আনা হবে। সুতরাং আমরা সবাইকে আপনাদের মাধ্যমে পাথর নিক্ষেপের মত ঘৃন্য কাজ হতে বিরত থাকার জন্য সচেতন হওয়ার জন্য অনুরোধ করছি।

চট্টগ্রাম রেলওয়ে পুলিশের পাথর নিক্ষেপ প্রতিরোধ কার্যক্রম অব্যাহত আছে এবং তা অব্যাহত থাকবে। পাথর নিক্ষেপের মত ঘৃন্য কাজটি বন্ধের জন্য সবাইকে এগিয়ে এসে সচেতনতামূলক কার্যক্রমের মাধ্যমে পাথর নিক্ষেপ বন্ধে সহায়তা করুন এবং কেউ পাথর নিক্ষেপ করলে তাকে সনাক্ত/ চিহিৃত করে আইনের আওতায় আনার জন্য সোর্পদ করুন ও ট্রেনে পাথর নিক্ষেপ বন্ধের ব্যবস্থা নিন এবং যাত্রীদের নিরাপদ ভ্রমণ নিশ্চিত করুন।

BBS cable ad